Breaking

বুধবার, ২৫ মার্চ, ২০২০

আক্বীদার বর্ণনা:একজন মুসলমানের প্রকৃতপক্ষে কি আক্বীদা রাখা দরকার ?

-: আক্বীদার বর্ণনা :-

ইসলামে আক্বীদা হল খাচা বা ফ্রেমের মত, যদি আক্বীদা সহি বা শুদ্ধ না হয় অথবা দূর্বলতা থেকে যায়, তবে এমন লােকের ইমান শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযােগ্য নয়।

একজন মুসলমানের প্রকৃতপক্ষে কি আক্বীদা রাখা দরকার ?
সংক্ষিপ্ত আকারে নিচে তা লিপিবদ্ধ করা হল :---
(১) সমগ্র দুনিয়া বা পৃথিবী ও পৃথিবীর সকল জিনিস পূর্বে ছিলনা, আল্লাহ
তায়ালার সৃষ্টি করার কারণেই সৃষ্ট হয়েছে। (২) আল্লাহ তায়ালা একক ও
অদ্বিতীয়, তিনি কারাে মুখ. ক্ষী নন, না তার মাতা-পিতা ও না তার স্ত্রী -
সন্তান আছে। (৩) তিনি চিরস্থায়ী, চিরঞ্জীব, অব্যয়, অক্ষয় তিনি সর্বদা
ছিলেন, আছেন, থাকবেন। (৪) প্রত্যেক জিনিসের উপর তিনি ক্ষমতাশীল,
কোনাে বিষয় তাঁর জ্ঞানের পরিধির বাইরে নয়। (৫) তিনিই উপাসনার যােগ্য,
সকল দোষ ত্রুটি থেকে পবিত্র ও নিষ্কলুষ, তিনিই জীবিত করেন তিনিই মৃত্যু
দেন। (৬) প্রত্যেক কাজ করা বা হওয়ার পূর্বেই আল্লাহ তায়ালা তা জানেন।
(৭) আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের (মানুষদের) কে বােধশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি
দিয়েছেন, যা দ্বারা তারা নিজ ইচ্ছায় গােনা-সাওয়াব (পাপ-পূণ্য) এর কাজ
করে, পাপ করলে তিনি নারাজ হন ও পূণ্য (নেকি) করলে তিনি খুশি হন।
(৮) আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের এমন কাজের হুকুম বা আদেশ দেন যা
অসম্ভব বা তাদের সাধ্যের বাইরে। (৯) আল্লাহ তায়ালার জিম্মায় বা
দায়িত্বে কোনাে জিনিস জরুরী নয়, তিনি মেহেরবানী করে যেটা দেন বা
করেন সেটা একান্ত এহসান বা অনুগ্রহ। (১০) আল্লাহ তায়ালা অনেক নবী
ও রসুলদের দুনিয়ায় তাঁর বান্দাদের সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য পাঠিয়েছেন,
তারা সকলেই গােনাহ থেকে পূত-পবিত্র। তাদের সঠিক সংখ্যা আল্লাহ পাকই
জানেন। আল্লাহ তায়ালা তাদের সত্যতা প্রমাণের জন্য তাদের দ্বারা অনেক
অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছেন সেগুলিকে মু’জিজা বলে। নবীদের মধ্যে সর্বপ্রথম
হজরত আদম আলাইহিস সালাম ও সর্বশেষে আমাদের নবী হজরত
মুহাম্মদ মুস্তফা সল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন, বাকি নবীগন।
মধ্যবর্তী সময়ে এসেছেন। (১১) নবী ও রসুল দের মধ্যে আ’লা মক্কামের
অধিকারী বা সর্বচ্চ সম্মানী হলেন আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা।
সল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এরপরে আর কোনাে নবী আসবে না, ইনি
হলেন সমগ্র সৃষ্টিকুলের রসুল। (১২) আমাদের নবী (সঃ) কে আল্লাহ
তায়ালা সম্পূর্ণ জাগ্রত অবস্থায় স্বশরীরে মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাশ হয়ে।
সপ্তআকাশ পরিভ্রমণ করান, জান্নাত ও জাহান্নাম পরিদর্শন করান এবং
স্বয়ং কথপােকথন করেন। একেই আমরা ‘মি’রাজ’ বলি। (১৩) আল্লাহ তায়ালা তাঁর কিছু মাখলুককে নূর বা জ্যোতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তাদের ,তাদের ফেরিতাহ বলা হয়।তারা কখনও আল্লাহ তায়ালার আদেশের নাফরমানী করে না
করে না। এদের মধ্যে চার জন অতি প্রসিদ্ধ হলেন,---
( ক) হজরতে জিবরাঈল, খ) হজরতে মিকাঈল গ) হজরতে ইস্রাফিল(ঘ) হজরতে আজরাঈল (আলাইহিমুস সালাম)।
(১৪) আল্লাহ তায়ালা তার কিছু
মাখলুককে নার বা আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, তাদের জিন বলা হয়। এরা
কিছু সৎ ও কিছু অসৎ, এদের মধ্যে সব থেকে কুখ্যাত হল - ইবলিস বা
শয়তান। (১৫) আল্লাহ তায়ালার কিছু মুকাব বান্দা বা অলীদের দ্বারা।
কখনও কখনও এমন কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটে যা বাস্তব বিরােধী এবং ।
সাধারণ মানুষের চিন্তার বাইরে, তাকে ‘কেরামত’ বলে। (১৬) কোনাে অলী।
যত বড়াে হন না কেন, কোনাে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র সাহাবার সমতুল্য বা
সমকক্ষ কখনও হতে পারবে না। (১৭) জ্ঞান ও হুঁশ অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত
শরীয়তের হুকুম আহকাম মান্য করা অপরিহার্য। (১৮) কোনাে অসৎ |
লােকের দ্বারা যদি কোনাে অলৌকিক ঘটনা ঘটে, তবে তা যাদু ও শয়তানী
ধোকা। (১৯) আল্লাহ তায়ালার অলীদের কখনও ঘুমন্ত ও জাগ্রত অবস্থায়
ভেদের জ্ঞান বা গােপন রহস্য প্রকাশ হয়, একে ‘কাশফ’ বা ‘ইহাম’
বলে। তা যদি শরীয়ত সম্মত হয় তাহলে গ্রহণযোগ্য, নচেৎ বর্জনীয়।
(20) বর্তমানে দ্বীনের বা শরীয়তের মধ্যে কোনাে নতুন জিনিস যােগ করা
বিদাত, এটা অতি বড় গােনাহ। (২১) আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবী ও
রসুলদের উপর ছােটো বড় অনেক আসমানী কিতাব অবতীর্ন করেছেন,
এদের মধ্যে চারটি কিতাব অতি প্রসিদ্ধ, যথা - ক) তাউরাত মূসা (আঃ)
এর উপর, খ) যাবুর দাউদ (আঃ) এর উপর, গ) ইঞ্জিল ঈশা (আঃ) ও ঘ)।
আলকুরআন আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা সল্লালাহু আলাইহি ওয়া।
সাল্লামের উপর। কুরানে মাজীদের পর কিয়ামত পর্যন্ত আর কোনাে আসমানা।
কিতাব আসবে না এবং কিয়ামত পর্যন্ত এর আদেশ সমুহ বলবৎ থাকবে।
সর্বপরি কিয়ামত পর্যন্ত এর মধ্যে কোনাে সংযােজন ও বিয়ােজন হবে না,
কারণ স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা নিজে এর হিফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন।


                         Next post👉

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন